বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভারী ট্যাংক কি আদৌ দরকার! বিস্তারিত বিশ্লেষণ
প্রকাশকাল: জুলাই ৫, ২০২৫
বাংলাদেশের ভৌগোলিক বাস্তবতা নদীঘেরা, কাদাযুক্ত, প্লাবনভূমি ও হাওর-বাঁওড়পূর্ণ। বর্ষাকালে বহু এলাকা পানিতে ডুবে যায় এবং দেশের অনেক রাস্তা সংকুচিত ও তুলনামূলকভাবে দুর্বল কাঠামোর।এই ধরনের পরিবেশে ৬০-৭০ টনের Heavy Tank পরিচালনা কার্যকর নয়।ভারী ট্যাংক সহজেই কাদায় আটকে যেতে পারে। অধিকাংশ ব্রিজ বা কালভার্ট এই ধরনের ভার বহন করতে অক্ষম। ফলে ট্যাংকের গতি সীমিত হয়ে পড়ে, যা দ্রুত রেসপন্স বা তড়িৎ আক্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তাছাড়া এর রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিবহন ব্যয়ও অত্যন্ত বেশি।
তাহলে বাংলাদেশের উপযোগী স্ট্রাটেজি কেমন হওয়া উচিতঃ
>> হালকা ট্যাংক(Light Tank):
বাংলাদেশের উচিৎ ৩০ টন ওজনের নিচের Light Tank এর উপর বেশি ফোকাস করা। সেনাবাহিনী ইতিমধ্যেই চীন হতে ১ রেজিমেন্ট VT-5 Light Tank ক্রয় করেছে।
>> হালকা ও উভচর যান (Light Armor):
MRAP, IFV,APC,LAV যেগুলো সহজে কাদা বা সংকুচিত রাস্তায় চলতে পারে।বিশেষ করে Amphibious যান হলে তা ব্যবহার করে নদী পাড়ি দেওয়াও সম্ভব।
>> Drone ও ATGM নির্ভর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা:
শত্রুর Heavy Tank মোকাবেলায় ড্রোন বিশেষ করে FPV ও Kamikaze ড্রোন, ATGM (Anti-Tank Guided Missile),RPG অত্যন্ত কার্যকর। এতে কম খরচে বেশি সাফল্য পাওয়া যায়।
>> Smart Defense Planning:
নদী, হাওর,পাহাড় ও জলাভূমিকে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজে লাগানো। সীমান্ত এলাকায় কৌশলগত সড়ক ও ছোট দুর্গ,বাংকার (fortification) তৈরি করা।
>> র্যাপিড মোবাইল ফোর্স:
ছোট ছোট Fast Strike Unit সীমান্তে প্রস্তুত রাখা উচিৎ।যাতে করে শত্রু পক্ষের ভারি ট্যাংক বা অন্যান্য যান সমূহ সীমান্তে প্রবেশ করা মাত্রই এন্টি ট্যাংক মিসাইল,রকেট ও মাইন দিয়ে ধ্বংস করা সম্ভব হয়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভারী ট্যাংক অনেক সময় শুধুই শোভাময় হয়ে দাঁড়ায়। বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজন টেকসই, মোবাইল, স্মার্ট, বাংলাদেশের ভৌগোলিক এবং প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিরক্ষা কৌশল — যাতে দ্রুত ও কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।